
বাংলাদেশে জুলাই আন্দোলনের কর্মীরা রাজনীতি করতে চাইলে সরকার থেকে বেরিয়ে এসে তা করা উচিত হবে বলে মনে করেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
বিবিসি বাংলাকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এ কথা বলেছেন বিএনপির মহাসচিব ।
বিএনপির এই নেতা বিভিন্ন বিষয় নিয়ে একান্ত সাক্ষাৎকারে কথা বল্রছেন, বিশেষ করে নির্বাচন নিয়ে দলের প্রস্তুতি, দলের নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে ওঠা চাঁদাবাজি-দখলদারির অভিযোগ, জাতীয় নাগরিক কমিটির দল গঠন ও অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কর্মকাণ্ড নিয়ে।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান দেশে আসার আগেও নির্বাচন হতে পারে বলে সাক্ষাৎকারে উল্লেখ করেছেন মির্জা ফখরুল। তারেক রহমান কবে নাগাদ দেশে ফিরতে পারেন, সে ধারণা দেওয়ার চেষ্টা করেছেন। এ ছাড়া আগামী নির্বাচনে বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার ভূমিকা কী হতে পারে, সে বিষয়েও কথা বলেছেন তিনি।
দুই পর্বে বিএনপির মহাসচিবের সাক্ষাৎকারটি নিয়েছেন বিবিসি বাংলার সম্পাদক মীর সাব্বির। নিচে বিবিসি বাংলার সাক্ষাৎকারটি তুলে ধরা হলো পাঠকের জন্য।
বিবিসি বাংলা:
শেখ হাসিনা ভারতে পালিয়ে যাওয়ার পর বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের সম্পর্কের একটা অবনতি দেখা গেছে। সম্প্রতি আমরা বেশ কয়েকবার এটা দেখেছি এবং ভারত সরকারের বিভিন্ন পর্যায় থেকে বলা হয়েছে যে নির্বাচিত সরকার আসার আগপর্যন্ত এই পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে না। তো ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক নিয়ে আপনাদের দলীয় অবস্থানটা কী?
বিএনপি মহাসচিব: আমরা সব সময় যেটা বলে এসেছি, সেটাই। আমরা ভারতকে আমাদের প্রতিবেশী মনে করি। একাত্তর সালের যুদ্ধে আমাদের সহযোগিতা করেছে, সে জন্য আমরা তাদের ধন্যবাদ জানাই। কিন্তু বিগত নির্বাচনগুলোয় ভারতের ভূমিকা কখনোই বাংলাদেশের জনগণের পক্ষে ছিল না। বিগত নির্বাচনগুলোয় ভারত অত্যন্ত দুঃখজনকভাবে যে পতিত আওয়ামী লীগ ফ্যাসিস্ট সরকার ছিল, তার পক্ষ অবলম্বন করেছিল। যেটা আমরা মনে করি যে ভারতের একটা ভুল রাজনীতি হয়েছে। কূটনীতির ক্ষেত্রে তারা একটা বড় ভুল করেছে। ভারতের সঙ্গে সুসম্পর্ক রাখা আমাদের দায়িত্ব বলে আমরা মনে করি একজন প্রতিবেশী হিসেবে, তবে কখনোই আমার স্বার্থকে বিপন্ন করে নয়। আমার স্বার্থ পুরোপুরি ঠিক রেখে আমার তার সঙ্গে যতটুকু সম্পর্ক রাখা দরকার, ততটুকুই সম্পর্ক রাখার পক্ষে আমরা।
বিবিসি বাংলা:
ছাত্র আন্দোলনের নেতারা একটা রাজনৈতিক দল গঠন করছেন, আপনি নিজেও বলছিলেন, তাঁরা একটা প্রক্রিয়ার মধ্যে আছেন।
বিএনপি মহাসচিব: হ্যাঁ, এটা পত্রপত্রিকায় আসছে এবং তারা বলেছে।
বিবিসি বাংলা: তো এই যে রাজনৈতিক দল গঠন করা, এটাকে আপনারা কীভাবে দেখছেন?
বিএনপি মহাসচিব: না, করতেই পারে। এটা তো তাদের গণতান্ত্রিক অধিকার এবং সে ক্ষেত্রে আমরা তাদের স্বাগত জানাব। কিন্তু একটা কথা অলরেডি উঠে আসছে মিডিয়াতে। কিংস পার্টি বলে একটা কথা উঠছে। আমি মনে করি এখান থেকে তাদের বেরিয়ে আসা উচিত। অর্থাৎ সরকারের কোনো সাহায্য না নিয়ে তারা যদি দল গঠন করতে চায়, সেটা তাদের জন্যই ভালো হবে।
বিবিসি বাংলা:
সেটা কীভাবে হতে পারে?
বিএনপি মহাসচিব: তারা নিজেরাই দল গঠন করবে? কেন, অন্য দলগুলো কীভাবে দল গঠন করেছে?
বিবিসি বাংলা:
সরকারে তাঁদের যাঁরা আছেন, তাঁদের সেখান থেকে সরে যাওয়া উচিত?
বিএনপি মহাসচিব: উচিত অবশ্যই এবং সরকারের কোনো সুবিধাই তাদের নেওয়া উচিত না।
বিবিসি বাংলা:
আপনি কি মনে করেন যে সরকারের সুবিধা নিয়ে এখন তাঁরা এটা করছেন?
বিএনপি মহাসচিব: না, দল তো তারা গঠন করছে, তাদের প্রতিনিধিরা সরকারে আছে। দ্যাটস এনাফ। হেলিকপ্টারে করে গিয়ে আপনার শীতবস্ত্র দিচ্ছে বিভিন্ন এলাকাতে। আপনার অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের ওপরে, জেনারেল অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের ওপরে নানা রকম প্রভাব তো তারা বিস্তার করছেই।