নিকাহ রেজিস্ট্রারদের ১৪ দফা দাবিতে সংবাদ সম্মেলন

বাংলাদেশ মুসলিম নিকাহ্ রেজিস্ট্রার কল্যাণ সমিতি জাতীয় প্রেসক্লাবে বিবাহ ও তালাক রেজিস্ট্রারদের যৌক্তিক দাবি নিয়ে সংবাদ সম্মেলন করেন।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন, বাংলাদেশ মুসলিম নিকাহ্ রেজিস্ট্রার কল্যাণ সমিতির সংগ্রামী ও সফল সভাপতি জনাব কাজী মো: মামুনুর রশিদ, সহ-সভাপতি প্রিন্সিপাল নজরুল ইসলাম তালুকদার, মহাসচিব- এড. কাজী মাওলানা মো: আবুল হোসেন, সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব মো: আশরাফ উদ্দিন ভূঁইয়া সায়েম, ঢাকা মহানগরের সেক্রেটারী মো: আজিজুর রহমান সুমন, কেন্দ্রীয় ও মহানগরের নেতৃবৃন্দসহ প্রমুখ।

মুসলিম নিকাহ রেজিস্ট্রারদের ১৪ দফা দাবি বাস্তবায়নের জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানান-
এক: নিকাহ্ রেজিস্ট্রারদের সুরক্ষা আইন প্রনয়ন করতে হবে। কেননা, মহামান্য সুপ্রিম কোর্টের ৫১ ডিএলআর অনুযায়ী নিকাহ রেজিস্ট্রারগন পাবলিক সার্ভেন্ট, সেহেতু পাবলিক সার্ভিসের নিয়ম অনুযায়ী আইনী ব্যবস্থা নেয়া যেতে পারে। তদন্ত বিহীন নিকাহ রেজিস্ট্রারগণের বিরুদ্ধে মামলার এজাহারে নাম আসাসহ অফিসে গিয়ে হয়রানির মত জঘন্য অপরাধ রীতিমতো সংগটিত হচ্ছে, নিকাহ রেজিস্ট্রারগণ অপরাধী হলে প্রচলিত নিয়মে অবশ্যই বিচারের সম্মুখীন হতে হবে এতে আমাদের আপত্তি নেই।

দুই: নিকাহ রেজিস্ট্রার অস্থায়ী নিয়োগ বন্ধ রাখতে হবে। অস্থায়ী নিয়োগ দিলে ভুয়া নিয়োগের প্রবনতা বৃদ্ধি পায়। একটি চক্র আইন ও বিচার বিভাগকে বিতর্কিত করার উদ্দেশ্যে সারাদেশে অস্থায়ী নিয়োগ হবে বলে বাণিজ্য করে যাচ্ছে। অস্থায়ী নিয়োগ চালু হলে সাধারণ আবেদনকারীগণ ক্ষতিগ্রস্ত হবে বিধায় অস্থায়ী নিয়োগ বন্ধ রাখা জরুরী। নিকাহ রেজিস্ট্রার নিয়োগের জন্য একটি নতুন কমিটি গঠন করে প্যানেলের মাধ্যমে নিয়োগ প্রক্রিয়া চালু করার দাবি জানাচ্ছি।

তিন: নিকাহ রেজিস্ট্রারের সংশ্লিষ্ট যোগ্যতা সম্পন্ন সন্তানকে শূণ্য পদে পিতার স্থলে পুত্রকে সরাসরি নিয়োগ দানের বিধান রাখার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন বলে আমরা বিশ্বাস করি।

চার: বাল্য বিবাহ রোধে বিবাহের ক্ষেত্রে কনের বয়স- ১৬ বছর এবং বরের বয়স- ১৮ বছর করার জোর দাবি জানাচ্ছি।

পাঁচ: নিকাহ রেজিস্ট্রারদের শিক্ষাগত যোগ্যতা আলিম পাশের পরিবর্তে কামিল করার দাবী জানাচ্ছি।

ছয়: নিকাহ রেজিস্ট্রারদের ছুটি জনিত সময়ে নিকাহ রেজিস্ট্রার হওয়ার যোগ্যতা রাখে এমন ব্যক্তিকে উক্ত সময়ে দায়িত্ব প্রদানের বিধান রাখার দাবি জানাচ্ছি, যা পূর্বেও ছিল।

সাত: প্রবাসীদের বিবাহ ও তালাক রেজিস্ট্রেশন পদ্ধতি নির্ধারণ এখন সময়ের দাবি। তা গ্রহণ করবেন বলে আমরা মনে করি।

আট: একাধিক স্বামী গ্রহণ ইসলামি শরিয়তে শান্তি যোগ্য অপরাধ, তাই যে সকল মহিলা পূর্বের স্বামীকে তালাক কার্যকর না করে বা মিথ্যা তথ্য দিয়ে একাধিক বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন তাদের বিষয়ে শান্তির বিধান প্রনয়ন করার দাবি জানাচ্ছি।

নয়: নিকাহ্ নামায় প্রদত্ত তথ্য ভুল হলে প্রয়োজনীয় সংশোধনের ব্যবস্থা রাখা একান্ত দরকার বলে বাস্তব অভিজ্ঞতা থেকে আমরা মনে করি।

দশ: প্রত্যেকটি বিবাহ ও তালাক অফিসে এসে রেজিস্ট্রিকরণের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা করার অনুরোধ জানাচ্ছি।

এগারো: কনে যে এলাকার স্থায়ী বা অস্থায়ী বাসিন্দা সে এলাকার নিকাহ রেজিস্ট্রার উক্ত বিবাহটি নিবন্ধন করবেন মর্মে বিধান করার দাবি জানাচ্ছি।

বারো: নোটারী পাবলিকের মাধ্যমে বিবাহ ও তালাকের হলফনামা বন্ধ করার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করলে বাল্য বিবাহ অনেকাংশেই রোধ হবে বলে আমাদের বিশ্বাস।

তেরো: নিকাহ্ রেজিস্ট্রারদের দাপ্তরিক কাজের জন্য অফিস সহায়ক রাখার বিধান রাখতে হবে।

চোদ্দো: ও তালাকের বালামে কিছু সংযোজন, বিয়োজনও সংশোধন প্রয়োজন তা করবেন বলে আমাদের বিশ্বাস। যদিও বাংলাদেশ মুসলিম নিকাহ্ রেজিস্ট্রার কল্যাণ সমিতি ইতোমধ্যে এ বিষয়ে একটি আবেদন আইন মন্ত্রনালয়ে দাখিল করেছে।