কে এই জাহিদ-উল ইসলাম; পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়

আওয়ামী বৃ্ত্ত থেকে বেরিয়ে আসতে পারছে না পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। সাবেক প্রধানমন্ত্রীর পদকপ্রাপ্ত পররাষ্ট্র সচিব জসিম উদ্দিন স্বৈরাচারের সহযোগী ও সুবিধাপ্রাপ্ত কূটনীতিকদের নিরাপদে রাখতে অত্যন্ত কৌশলে কাজ করে যাচ্ছেন।

সম্প্রতি সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাসান মাহমুদের অতিঘনিষ্ট কর্মকর্তা এ এফ এম জাহিদ-উল ইসলাম কৌশলে মন্ত্রণালয়ের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ পদ মহাপরিচালক (প্রশাসন) হিসেবে অতিরিক্ত দায়িত্বভার গ্রহণ করেন। জানা যায়, সম্প্রতি তিনি প্রধান প্রটোকল কর্মকর্তা হওয়ার জন্য জোর প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। প্রধান প্রটোকল কর্মকর্তার সংক্ষিপ্ত তালিকায় তাঁর নাম সবার উপরে আছে বলে জানা যায়। এ নিয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে চলছে ব্যাপক কানাঘুষা।

২১ ব্যাচের কর্মকর্তা, সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রীর অতি ঘনিষ্ট কর্মকর্তা হিসাবে সর্বাধিক পরিচিত এ এফ এম জাহিদ-উল ইসলাম বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনের সময় নিজের দায়িত্ব ছেড়ে সার্বক্ষণিক পরামর্শকের মতো হাসান মাহমুদের সঙ্গে লেগে থাকতেন। হাসান মাহমুদের বক্তব্যের স্ক্রিপ্ট তৈরি করে দেওয়ার জন্য যে কোর টিম গঠন করা হয়েছিল সেই টিমের সদস্যদের মধ্যে অন্যতম। চাকুরি জীবনের শুরুতে আওয়ামী প্রভাব খাটিয়ে তিনি যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক কনস্যুলেটে ও পরে হ্যানয়ে গুরুত্বপূর্ণ পদ বাগিয়ে নেন।

আওয়ামী এজেন্ডা বাস্তবায়ন করতে শেখ হাসিনা সরকারের সময় তাঁকে নয়াদিল্লীতে পাঠানো হয়। সে সময় আওয়ামী এজেন্ডা বাস্তবায়নের পুরস্কার হিসেবে তাঁকে পরবর্তী সময়ে লন্ডনে ডেপুটি হাইকমিশনার হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়। নয়াদিল্লী ও লন্ডন মিলিয়ে তিনি নজিরবিহীনভাবে টানা ০৯ বছরের অধিক বিদেশে কর্মরত ছিলেন। তিনি শেখ হাসিনার ঘনিষ্ঠভাজন সাবেক পররাষ্ট্র সচিব শহিদুল হকের কোটারি গ্রুপে অন্তর্ভুক্ত ছিলেন।

ক্ষমতার অপব্যবহার, দুর্ব্যবহারসহ তাঁর বিরুদ্ধে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ রয়েছে। তাঁকে প্রায়ই লন্ডনে ও নয়াদিল্লীতে কর্মরত থাকাকালীন অপ্রকৃতস্থ অবস্থায় দেখা যেতো বলে অভিযোগ রয়েছে। বর্তমানে আওয়ামী ঘনিষ্ঠ কর্মকর্তা জাহিদ প্রধান প্রোটকল কর্মকর্তা হওয়ার জোর তদবির চালাচ্ছেন। একই সাথে তিনি রাষ্ট্রদূত হিসেবে পদায়নের জন্যও জোর তদবির চালাচ্ছেন।

বিগত সরকারের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাসান মাহমুদের সময় মহাপরিচালক জাহিদের অত্যাচারে মন্ত্রণালয়ের সাধারণ কর্মকর্তারা অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছিলো। একারণেই এই কর্মকর্তাকে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব দেওয়ায় মন্ত্রনালয়ের সাধারণ কর্মকর্তাদের মধ্যে ব্যাপক ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। তাঁকে অনতিবিলম্বে ওএসডি করে বিভাগীয় মামলা চালু করার দাবি জানিয়েছে মন্ত্রনালয়ের কর্মকর্তা কর্মচারীরার।