ভোলার জেলেদের ভাগ্যে জোটেনি এখনো খাদ্য সহায়তা

ভোলার মেঘনা-তেতুলিয়া নদীতে ইলিশসহ সবধরনের মাছ শিকারের ওপর দুই মাসের সরকারি নিষেধাজ্ঞার প্রায় দুই সপ্তাহ পেরিয়ে গেলেও কর্মহীন জেলেদের ভাগ্যে জোটেনি সরকারি খাদ্য সহায়তার চাল। ফলে গত ১ মার্চ থেকে শুরু হওয়া এই নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করেই নদীতে মাছ শিকারে নামছেন কিছু জেলে।

জেলেরা বলছেন, সরকারি সহায়তা না পাওয়ায় পেটের দায়ে বাধ্য হয়েই নদীতে নামছেন তারা। অন্যদিকে আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে সরকারি সহায়তার চাল বিতরণের আশ্বাস দিয়েছে মৎস্য বিভাগে।
ভোলা জেলা মৎস্য বিভাগের তথ্যমতে, জেলার সাত উপজেলায় নিবন্ধিত জেলে রয়েছে ১ লাখ ৭০ হাজার ২৮৩ জন। তাদের অনুকূলে ৪০ কেজি করে ৮৯ হাজার ৬০০ শত জেলে পরিবারের জন্য ৭ হাজার ১৬৮ টন চাল বরাদ্দ পাওয়া গেছে। যা নিষেধাজ্ঞার প্রথম সপ্তাহে বিতরণ করার কথা থাকলেও বিতরণ করা হয়নি। এতে পবিত্র রমজান মাসে চরম দুরাবস্থার মধ্যে দিন কাটাচ্ছে জেলে পরিবারগুলো।

সরেজমিনে মেঘনা নদীর ভোলা সদর উপজেলার তুলাতুলি, নাছিরমাঝি, ভোলার খাল ও দৌলতখান উপজেলার মদনপুরের নদী তীরবর্তী এলাকা ঘুরে দেখা যায়, সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত প্রায় কয়েক শতাধিক জেলে নদীতে মাছ শিকার করছেন। কেউ মাছ শিকারের জন্য নদীতে যাচ্ছেন, আবার কেউ তীরে ফিরছেন।

মাছ শিকার শেষে তীরে ফেরা কয়েকজন জেলের সঙ্গে কথা হয়। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক জেলেরা জানান, সরকার নদীতে অভিযান দিছে পেটে তো আর অভিযান দেয়নি। কী করব? না খেয়ে তো আর থাকা যায় না। পেটের দায়ে নদীতে মাছ ধরতে গেছি। মৎস্য বিভাগ, কোস্টগার্ড, নৌপুলিশ নদীতে অভিযান চালায়, তারপরও বাধ্য হয়ে নদীতে যাই। একদিকে নদীতে অভিযান অন্যদিকে সংসার। আমাদের জন্য বরাদ্দকৃত চাল এখনো পাইনি, চাল কেনার টাকাও নাই। অভিযান শুরু হওয়ার পর থেকে খেয়ে না খেয়ে থাকতে হয়। অতিদ্রুত আমাদের জন্য বরাদ্দকৃত চাল দেওয়ার দাবি জানাই, তাহলে আমরা নিষেধাজ্ঞার সময়ে আর নদীতে যাব না।
ভোলা জেলা মৎস্য কর্মকর্তা বিশ্বজিৎ কুমার দেব বলেন, ১ মার্চ থেকে আগামী ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত দুই মাস ভোলার মেঘনা-তেতুলিয়া নদীতে ইলিশসহ সব ধরনের মাছ শিকারের উপর নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে। নিবন্ধিত জেলেদের অনুকূলে এ বছর ৪০ কেজি করে চাল পাবেন ৮৯ হাজার ৬০০ জেলে পরিবার। চলতি সপ্তাহের মধ্যে চাল বিতরণ করা হবে। নদীতে নিয়মিত অভিযান চলছে, নিষেধাজ্ঞা অমান্যকারীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।