ভোলার মনপুরায় হাজীরহাট ইউনিয়নে এই রমজান মাসেও লক্ষাধিক মানুষ বিদ্যুতের আলো থেকে বঞ্চিত।
এলাকাবাসী জানায় ৬ ঘণ্টা বিদ্যুৎ দেওয়ার কথা থাকলেও শুধু উপজেলার প্রধান শহর ও উপজেলার আশপাশের এলাকায় রমজানের আগের রাতে ৩ ঘন্টা বিদুৎ দিয়েছিলো। কিন্তু প্রথম রমজান থেকে এক-দুইদিন পর পর ৩০ থেকে ৪০ মিনিট করে বিদ্যুৎ দেয় আমাদেরকে। বিদ্যুতের এই ভেল্কিবাজিতে অতিষ্ঠ ব্যবসায়ীসহ জনসাধারণ।
২৪ ঘণ্টা জাতীয় গ্রিডের বিদ্যুতের দাবিতে দীর্ঘদিন আন্দোলন করে আসছেন মনপুরার সর্বস্তরের মানুষ। জনসাধারণের প্রানের দাবি ছিলো জাতীয় গ্রিডের বিদ্যুৎ। কিন্তু সেই দাবি পূরণ হয়নি এখনো।
এই রমজান মাসে দেশের সকল জেলার মানুষ নিরবচ্ছিন্ন বিদুৎ পেলেও ১ ঘন্টাও বিদুৎ ভাগ্যে জোটেনি ভোলার বিচ্ছিন্ন দ্বীপের মনপুরা উপজেলার মানুষের। যেখানকার সাধারণ জনগণ এই রমজান মাসেই এখনও ২৪ ঘণ্টার মধ্যে এক-দুইদিন পর পর ৩০ থেকে ৪০ মিনিট বিদ্যুত রুটিনমাফিক পায়। শেখ হাসিনা সরকারের ন্যায্যমূল্যে ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ পৌঁছে দেওয়ার কথা থাকলেও তা বাস্তবায়ন হয়নি ভোলার বিছিন্ন দ্বীপ মনপুরায় ।
খোঁজ নিতে গেলে স্থানীয় গ্রাহকরা জানায়, ওয়েস্ট জোন পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেড উপজেলা সদর ও আশপাশের এলাকায় দীর্ঘদিন রাতের বেলায় দৈনিক ৩ ঘণ্টা বিদ্যুৎ দিয়ে আসলেও প্রথম রমজান থেকে বিদুৎ পায়নি গ্রাহকেরা।
বিদ্যুৎ গ্রাহক শামিম, মো. আমজাদ হোসেন অভিযোগ করে বলেন, ‘আমরা বিদ্যুৎ পাই না। অথচ প্রতিমাসে বিদ্যুৎ বিল পরিশোধ করতে হয়। কবে বিদ্যুৎ পাবো তাও জানি না।’
বিদ্যুৎ না থাকার কারণে ব্যবসা-বাণিজ্যসহ সব ক্ষেত্রে বিরুপ প্রভাব পড়েছে। আমাদের দোকানের ফ্রিজ, টিভিসহ লাখ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে। বেশিরভাগ ফ্রিজ নষ্ট হয়ে গেছে।
মনপুরা বিদুৎ বিভাগের ইঞ্জিনিয়ার ফরিদুল ইসলাম জানান ১ হাজার কেভিএ (১ মেগাওয়াট) উৎপাদন ক্ষমতা সম্পন্ন মেশিনটি দুই বছর আগে বার্স্ট হয়ে সম্পূর্ণ বিকল (নষ্ট) হয়ে যায়। যার ফলে গ্রাহকের বিদ্যুতের চাহিদা পূরণ করতে পারছি না আমরা। বিকল্প হিসেবে ৬৫০ কেভিএ, ৫০০ কেভিএ ও ৫০০ কেভিএ তিনটি পুরাতন মেশিন চালু করে বিদ্যুৎ সরবরাহ করলেও তা গ্রাহকের চাহিদা মোটেও পূরণ করতে পারছে না। তিনটি পুরাতন মেশিনের মধ্যে ১ মার্চ ৫০০ কেভিএ দুটি মেশিন আবার নষ্ট হয়ে যায় অতিরিক্ত লোডের কারনে। ৬৫০ কেভিএ একটি মেশিন চালু করে কোনোমতে উপজেলার প্রধান বাজার হাজিরহাট বাজারে বিদুৎ দিয়ে আসছি তবে ইঞ্জিন মেরামতের কাজ চলমান।
তিনি আরো জানান, ‘আমাদের চারটি মেশিনের মধ্যে তিনটি মেশিন নষ্ট হয়ে গেছে। একটি মেশিন দিয়ে আমরা পার্টটাইম এলাকাভিত্তিক বিদ্যুত দিয়ে যাচ্ছি। আমরা মেশিন মেরামতের কাজ করছি। মেশিন ঠিক হলে আমরা আবার আগের মতো বিদ্যুৎ দিতে পারবো। গ্রাহকদের একটু ধৈর্য ধরতে হবে। আমাদের আন্তরিকতার কোনো ঘাটতি নেই। আমাদের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ বিষয়টি জানেন।’