
ফরিদপুরের বোয়ালমারীতে হাসপাতালের ওয়াশরুমে এক নবজাতককে ফেলে রেখে পালিয়ে গেছে নবজাতকের মা।
মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে জেলার বোয়ালমারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এ ঘটনা ঘটে।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্রে জানা যায়, মঙ্গলবার সকাল ১০টার দিকে এক ব্যক্তি অসুস্থ এক নারীকে সাথে নিয়ে হাসপাতালের জরুরি বিভাগে চিকিৎসা নিতে আসে। জরুরি বিভাগের খাতায় ওই নারীর নাম লেখা হয় রূপসী। তার দেওয়া তথ্যমতে বোয়ালমারী উপজেলার পরমেশ্বরদী ইউনিয়নের মালিখালি গ্রামের বাসিন্দা আজিজুর তার স্বামী। এ সময় কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে আলট্রাসনোগ্রাফি করতে পরামর্শ দেন। জরুরি বিভাগ থেকে বের হয়ে শৌচাগারে যান ওই নারী (রুপসী)। সেখানে সন্তান প্রসব করে কাউকে কিছু না জানিয়ে দ্রুত হাসপাতাল ত্যাগ করেন নারী ও সাথে থাকা যুবক।
এর কিছুক্ষণ পরই হাসপাতালের পরিচ্ছন্নকর্মী সন্ধ্যা রানী নবজাতককে শৌচাগারের মধ্যে দেখতে পেয়ে জরুরি বিভাগে খবর দেন। জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক ও নার্সরা প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে শিশুটিকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠান।
সিসিটিভির ফুটেছে দেখা যায়, জরুরি বিভাগ থেকে চিকিৎসা নিয়ে রোগী হাসপাতালের ওয়াশরুমে যায়। সেখান থেকে বের হয়ে তারা হাসপাতাল ছেড়ে চলে যায়। পরে দেখা যায় ৫ মাসের একটি বাচ্চা পড়ে আছে সেখানে এবং বাচ্চাটা জীবিত। বাচ্চাটি দেখে পরিচ্ছন্নকর্মী চিৎকার করে, তার ডাক-চিৎকারে সকলে এগিয়ে গিয়ে বাচ্চাটিকে উদ্ধার করে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠিয়ে দেয়।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগে কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. ফাতেমা ইশরাত জাহান বলেন, প্রচণ্ড প্রসব ব্যাথা নিয়ে স্বামী পরিচয়দানকারী এক যুবককে সাথে নিয়ে হাসপাতালে আসে রুপসী নামে এক নারী। প্রাথমিক ভাবে গর্ভের সন্তানটি বেশ বড় মনে হওয়ায় তাকে আলট্রাসনো করতে বলি। তারা আলট্রাসনো করতে যায়। পরে জানতে পারি জরুরি বিভাগ থেকে বের হয়ে শৌচাগারে গিয়ে সেখানে সন্তান প্রসবের পর নবজাতককে রেখে পালিয়ে যায় তারা। আমরা একাধিক বার তাদের সাথে ফোনে যোগাযোগের জন্য ফোন দিলে ফোন রেখে দেন তারা। ওই নারী গর্ভপাত ঘটাতে ১০-১২ ঘন্টা আগে ওষুধ খেয়েছেন বলেছিলেন।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. নাজমুল হাসান বলেন, বাচ্চাটিকে উদ্ধার করে চিকিৎসা শেষে তাকে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছিল। সেখানে নেওয়ার পথে বাচ্চাটি মারা যায়। কে বা কারা এমন কাজ করেছে সিসিটিভি ফুটেজ দেখে তা শনাক্ত করার চেষ্টা চলছে।
এ বিষয়ে বোয়ালমারী থানার অফিসার ইনচার্জ মো. মাহমুদুল হাসান বলেন, নবজাতককে ফেলে যাওয়ার মতো কাজ যারা করেছে তাদের খুঁজে বের করার চেষ্টা চলছে।