গাড়িতে রাখা বোতলের পানি ২ দিন পরে খেলেই বিপদ

অনেকেরই গাড়ির ভিতরে সপ্তাহ খানেক ধরে পড়ে থাকে প্লাস্টিকের পানির বোতল। সেই বোতলেই আবার পানি ভরে খাওয়া হয়। এই অভ্যাস যে কতটা ক্ষতিকর, তা-ই বিশদে বললেন বিজ্ঞানীরা।

গাড়িতে পানির বোতল দিনের পর দিন ফেলে রাখার অভ্যাস অনেকেরই আছে। বিশেষ করে প্লাস্টিকের বোতলে পানি রেখে তা দুই থেকে তিন পরেও দিব্যি খেয়ে নেন অনেকেই। আবার খুব পুরনো বোতল যা দিনের পর দিন গাড়ির ভিতরে থাকে, তাতেও পানি ভরে খাওয়া হয় অনেক সময়েই। এই অভ্যাস শরীরের জন্য কতটা বিপজ্জনক, তা-ই জানালেন ইউনিভার্সিটি অফ ফ্লোরিডা ইনস্টিটিউট অফ ফুড অ্যান্ড এগ্রিকালচারাল সায়েন্সেসের বিজ্ঞানীরা।

গবেষকেরা জানাচ্ছেন, ১২টি ব্র্যান্ডের প্লাস্টিকের বোতলে জল ভরে গাড়ির ভিতরে দিনের পর দিন রেখে তা পরীক্ষা করে দেখা হয়েছে। গাড়ির ভিতরের গরমে সেইসব প্লাস্টিকের বোতলের জলে কী কী মিশেছে তা দেখে চমকে উঠেছেন তাঁরা। দেখা গিয়েছে, প্লাস্টিক থেকে বেরনো রাসায়নিক জলে মিশেছে। যত দিন ধরে বোতলগুলি রাখা হয়েছে গাড়ির ভিতরে, রাসায়নিকের পরিমাণ ততটাই বেড়েছে।

বাজারে যে জলের বোতলে পানীয় জল বিক্রি করা হয়, তার অধিকাংশই এক বার ব্যবহারযোগ্য প্লাস্টিকে তৈরি। প্লাস্টিকের বোতল তৈরিতে ব্যবহৃত হয় ‘বিসফেনল এ’ বা ‘বিপিএ’-সহ একাধিক উপাদান, যা শরীরের জন্য ক্ষতিকর। গবেষকেরা জানাচ্ছেন, গাড়ির ভিতরের তাপমাত্রায় প্লাস্টিকের বোতল থেকে বিসফেনল-এ, থ্যালেট সহ নানা রাসায়নিক নির্গত হয়। সেইসব মেশে জলে। ওই বোতলগুলি থেকে নিয়মিত জল খেলে সূক্ষ্মাতিসূক্ষ্ম প্লাস্টিকের কণা রক্তে জমতে শুরু করে। এই কণাগুলি আকারে ৫ মিলিমিটারেরও কম। এদের বলা হয় মাইক্রোপ্লাস্টিক। গবেষণা বলছে, এই মাইক্রোপ্লাস্টিকের থেকেও সূক্ষ্ম ন্যানোপ্লাস্টিক পাওয়া গিয়েছে বোতলের জলে। এদের দৈর্ঘ্য ১ থেকে ৫০০০ মাইক্রোমিটারের মতো। প্লাস্টিকের বোতলের জলে এই সূক্ষ্ম প্লাস্টিকের কণাগুলিই মিশে থাকতে দেখেছেন গবেষকেরা।

এইসব বোতলের জল যদি কেউ পান করেন, তা হলে সেইসব প্লাস্টিকের বিষাক্ত কণা রক্তে মিশে গিয়ে কিডনির জটিল রোগের কারণ হবে। বাড়বে ক্যানসারের ঝুঁকি। দেখা দিতে পারে প্রজননের সমস্যাও। অধিক মাত্রায় প্লাস্টিক-কণা শরীরে জমলে পুরুষদের ক্ষেত্রে শুক্রাণুর পরিমাণ কমিয়ে দেয়। মহিলাদের হরমোন ক্ষরণে বাধা তৈরি করে। বিশেষ করে, ইস্ট্রোজেন হরমোনের কার্যকারিতা কমে যেতে পারে।