আজ বুধবার সকালে পুরান ঢাকার হাজতখানার সামনে পাঁচজন পুলিশ সদস্য লাঠি হাতে দাঁড়িয়ে আছে। তাঁদের পেছনে মাথা নিচু করে দাঁড়িয়ে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বেসরকারি বিনিয়োগ ও শিল্পবিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান ও সাবেক তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহ্মেদ পলক।
সালমানের দুই হাত পিছনে নিয়ে পরানো হাতকড়া। পলকেরও দুই হাত পেছনে, পরানো হাতকড়া। পলকের পেছনে মাথা নিচু করে দাঁড়িয়ে সাবেক সংসদ সদস্য সুলাইমান সেলিম ও ঢাকার উত্তর সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র আতিকুল ইসলাম। সুলাইমান ও আতিকের দুই হাত পেছনে, পরানো হাতকড়া।
আরও দাঁড়িয়ে আছে সিনিয়র সচিব মহিবুল হক, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের ছেলে সাফি মুদ্দাসসির খান জ্যোতি। এদেরও পেছনে দুই হাত, পরানো হাতকড়া।
সালমান, পলক, আতিকুল, মহিবুলদের মাথায় পুলিশের হেলমেট। হেলমেটের সামনের অংশ গ্লাস দিয়ে ঢাকা। আর প্রত্যেকের বুকে পুলিশের বুলেটপ্রুফ জ্যাকেট।
আদালতকক্ষের সামনে নেওয়ার পর তাঁদের প্রত্যেকের মাথা থেকে পুলিশের হেলমেট খুলে নেওয়া হয়। যখন তাঁদের প্রত্যেককে কাঠগড়ায় তোলা হয়, তখন দুই হাত পেছনে নিয়ে যে হাতকড়া পরানো ছিল, তার এক হাতের হাতকড়া পুলিশ খুলে দেয়। তখন সালমান, পলক, আতিকুল, সুলাইমান ও মহিবুলরা মাথা নিচু করে কাঠগড়ায় দাঁড়িয়ে থাকেন।
আইনজীবীর উদ্দেশে পলক বলেন, ‘আমি এখন জামিনের আশা করি না। কিন্তু আপনি আমার বিরুদ্ধে দায়ের করা প্রতিটি মামলার এজাহার ও অভিযোগপত্রর হুবহু অনুলিপি তুলবেন।
এরপর পলক তাঁর আইনজীবীকে একের পর এক পরামর্শ দিতে থাকেন। পলকের বাঁ পাশে দাঁড়ানো আতিকুল ইসলামও তাঁর আইনজীবীর সঙ্গে কথা বলছিলেন।
আর সালমান এফ রহমান কাঠগড়ায় যাওয়ার পর থেকেই তাঁর আইনজীবীর সঙ্গে মামলা–সংক্রান্ত বিষয়সহ নানা বিষয়ে কথা বলতে থাকেন। এর মধ্যে একজন কর্মকর্তা বলে ওঠেন, ‘স্যার (বিচারক) আসছেন।’
এজলাসে বিচারক আসার পর পুলিশের পক্ষ থেকে সালমান এফ রহমান ও আতিকুলের নাম ধরে ডাকা হয়।
পুলিশের পক্ষ থেকে বলা হয়, সালমান ও আতিকুলের বিরুদ্ধে ভাটারা থানার একটি মামলায় গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদন করা হয়েছে। তখন আদালত তাঁদের এ মামলায় গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদন মঞ্জুর করেন।
রিমান্ডের সপক্ষে আদালতে যুক্তি তুলে ধরতে শুরু করেন ঢাকার মহানগর দায়রা জজ আদালতের প্রধান পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) ওমর ফারুক ফারুকী।
পলকের আইনজীবী আদালতকে বলেন, সম্প্রতি একটানা পলকের ১২ দিন রিমান্ড কার্যকর করা হয়েছে। এর আগেও তাঁকে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। তিনি কোনো হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত নন।
আদালত শুনানি নিয়ে পলকের তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।