৬ দফা দাবিতে ঢাকা পলিটেকনিকসহ কারিগরি ছাত্ররা সাতরাস্তা মোড়ে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছে

ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারদের অধিকার রক্ষায় সকাল ১০টার দিকে কারিগরি শিক্ষার্থীরা প্রথমে ঢাকা সরকারি পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটে, তেজগাঁও, জড়ো হন। পরে তারা মিছিল সহকারে এসে তেজগাঁও সাতরাস্তা মোড় অবরোধ করেন। এসময় তাদের প্ল্যাকার্ড হাতে বিভিন্ন স্লোগান দিতে দেখা গেছে।

এই অবস্থান কর্মসূচির জন্য মগবাজার-মহাখালী রোড, সাতরাস্তা-ফার্মগেট রোড, হাতিরঝিল-সাতরাস্তা রোড এমনকি মগবাজার ফ্লাইওভারের রাস্তা বন্ধ আছে।

এ বিষয়ে তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) গাজী শামীমুর রহমান বলেন, ‘ছয় দফা দাবিতে সহস্রাধিক কারিগরি শিক্ষার্থী সাতরাস্তা মোড় অবরোধ করায় ওই সড়কে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। এতে ভোগান্তিতে পড়েছেন স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থী ও অফিসগামী মানুষ।’

বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা তাদের ছয় দফা দাবি অবিলম্বে মেনে নিতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। অন্যথায় তারা আরও কঠোর আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন।

শিক্ষার্থীদের ছয় দফা দাবির মধ্যে এক নম্বর হচ্ছে জুনিয়র ইনস্ট্রাক্টর পদে ক্রাফট ইনস্ট্রাক্টরদের অবৈধ পদোন্নতির রায় হাইকোর্ট কর্তৃক বাতিল করতে হবে। ক্রাফট ইনস্ট্রাক্টরদের পদবি পরিবর্তন, মামলার সঙ্গে সংশ্লিষ্টদের চাকরিচ্যুত করতে হবে। ২০২১ সালে রাতের আঁধারে নিয়োগপ্রাপ্ত ক্রাফট ইনস্ট্রাক্টরদের নিয়োগ সম্পূর্ণভাবে বাতিল এবং সেই বিতর্কিত নিয়োগবিধি অবিলম্বে সংশোধন করতে হবে। 

দ্বিতীয় দাবি, ডিপ্লোমা ইন-ইঞ্জিনিয়ারিং কোর্সে যেকোনো বয়সে ভর্তির সুযোগ বাতিল করতে হবে। উন্নত বিশ্বের আদলে চার বছর মেয়াদি মানসম্পন্ন কারিকুলাম চালু করতে হবে এবং একাডেমিক কার্যক্রম পর্যায়ক্রমে ইংরেজি মাধ্যমে করতে হবে। 

তৃতীয় দাবি, উপসহকারী প্রকৌশলী ও সমমান (১০ম গ্রেড) থেকে পাস করা শিক্ষার্থীদের জন্য সংরক্ষিত থাকা সত্ত্বেও যেসব সরকারি, রাষ্ট্রীয়, স্বায়ত্তশাসিত ও স্বশাসিত প্রতিষ্ঠানে ডিপ্লোমা প্রকৌশলীদের নিম্ন পদে নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে, তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। এই পদে অন্য কাউকে নিয়োগ দেওয়া যাবে না।

শিক্ষার্থীদের চতুর্থ দাবি, কারিগরি সেক্টর পরিচালনায় পরিচালক, সহকারী পরিচালক, বোর্ড চেয়ারম্যান, উপসচিব, পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক, অধ্যক্ষসহ সংশ্লিষ্ট সব পদে কারিগরি শিক্ষাবহির্ভূত জনবল নিয়োগ নিষিদ্ধ করতে হবে এবং তা আইনানুগভাবে নিশ্চিত করতে হবে। এই পদগুলোয় অনতিবিলম্বে কারিগরি শিক্ষায় শিক্ষিত জনবল নিয়োগ ও সব শূন্য পদে দক্ষ শিক্ষক ও ল্যাব সহকারী নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করতে হবে। 
পঞ্চম দাবি, স্বতন্ত্র ‘কারিগরি ও উচ্চশিক্ষা’ মন্ত্রণালয় প্রতিষ্ঠা ও ‘কারিগরি শিক্ষা সংস্কার কমিশন’ গঠন করতে হবে।

আর ষষ্ঠ দাবি, পলিটেকনিক ও মনোটেকনিক ইনস্টিটিউট থেকে পাস করা শিক্ষার্থীদের উচ্চশিক্ষার সুযোগের লক্ষ্যে একটি উন্নতমানের টেকনিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করতে হবে। পাশাপাশি নির্মাণাধীন চারটি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে (নড়াইল, নাটোর, খাগড়াছড়ি ও ঠাকুরগাঁও) পলিটেকনিক ও মনোটেকনিক থেকে পাস করা শিক্ষার্থীদের জন্য অস্থায়ী ক্যাম্পাস ও ডুয়েটের আওতাভুক্ত একাডেমিক কার্যক্রম পরিচালনার মাধ্যমে আগামী সেশন থেকে শতভাগ সিটে ভর্তির সুযোগ নিশ্চিত করতে হবে।

এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত ছাত্রছাত্রীদের অবস্থান কর্মসূচি চলছে। দাবি আদায় না হোওয়া পর্যন্ত চলবে বলে ছাত্ররা জানিয়েছে।